আর্কাইভ
logo
ads

৫৪ বছরেও পরিচয় মেলেনি সান্তাহারে মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদ সুজীত নন্দীর

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি

প্রকাশকাল: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৮ পি.এম
৫৪ বছরেও পরিচয় মেলেনি সান্তাহারে মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদ সুজীত নন্দীর

অনলাইন ডেস্ক

বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলায়  মুক্তিযুদ্ধে নিহত ময়মনসিংহের বাসিন্দা শহীদ সুজীত নন্দীর পরিচয় মেলেনি স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও। ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময়ে আদমদীঘি উপজেলার ঢাকা রোডের কাছেএকটি রেলওয়ে ব্রিজ উড়াতে গিয়ে এ্যন্টি ট্যাংক মাইন বিস্ফোরন ঘটাতে গিয়ে সে  নিহত হয়।

১৯৭১ সালে ১২ ডিসেম্বর আদমদীঘি সদর পাক হানাদার মুক্ত হয়। আদমদীঘি মুক্ত করে ৭ নং সেক্টরের ৬৮ নং দলের  কয়েকশত মুক্তিযোদ্ধা সান্তাহার শহর মুক্ত করতে পশ্চিম ঢাকা রোড থেকে যুদ্ধ করতে করতে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। প্রায় ২/৩ দিন চলে সে প্রতিরোধ। মুক্তিযুদ্ধ যুদ্ধকালিন কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা এল কে আবুল, মেজর (অবঃ) হাকিম এবং মোঃ হায়াতের  নেতৃত্বে ৬৮ নং দলটি পরিচালিত হচ্ছিল। একটা সময় পাক সেনারা সান্তাহার থেকে মিটার গ্রেজ লাইনে ট্রেন যোগে প্রচন্ড বেগে গুলি করতে করতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধে এগিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারাও প্রচন্ড প্রতিরোধ গড়ে তুললে পাকবাহিনীর বহন করা ট্রেনটি সান্তাহারে ফিরে আসে। পাক বাহিনী সান্তাহার ওয়ার্কসপ থেকে প্রচন্ড বেগে গোলা ছুড়তে থাকে। এই অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধারা সিদ্ধান্ত নেয় সান্তাহার থেকে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ করতে রেললাইন বোমা বিস্ফোরনে উড়িয়ে ফেলা হবে।

রেললাইন উপড়ে ফেলার এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘঠানোর দায়িত্ব পড়ে বোমা বিষ্ফোরক বিশেষজ্ঞ মুক্তিযোদ্ধা সুজীত নন্দীর ওপর। ৬৮ নং দলের কমান্ডার এল কে আবুলের পরামর্শে দুটি এ্যন্টি মাইন বোমা রেলের লাইনে লাগানো হয়। প্রথম গোলাটি বিষ্পোরিত হয় ভালভাবে। উড়ে যায় একটি লাইনের বেশ কিছু অংশ। দ্বিতীয় মাইনটি বিস্পোরন করতে সুতার মাথা টান দেয় সুজীত। মাইন বিস্ফোরন না হওয়াতে সেটি পরীক্ষা করতে যায় সুজীত। সে সময় মাইনটি বিষ্ফোরণ ঘটলে সুজীতের দেহ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়।  শহীদ হন সুজীত। তাঁর মরদেহও পাওয়া যায়নি।

৬৮ নং দলের বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সুজীত নন্দীর বাড়ি বৃহত্তর ময়মনসিংহে। সে ছিল স্নাতক পাশ। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে সে ভারতে গিয়ে ট্রেনিং নিয়ে সান্তাহার এলাকায় ৬৮ নং দলের হয়ে যুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পর কোন কোন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সুজীদের খোঁজে ময়মসসিংহ এলাকায় গিয়েও তাঁর কোন ঠিকানা পায়নি।

এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধকালিন কমান্ডার এবং ৬৮ নং দলের কমান্ডার প্রয়াত এল কে আবুল বলেন,  সুজীতের কাঁধে সব সময় একটা ব্যাগ থাকতো। সেই ব্যাগে আমাদের দলের সব সদস্যদের নাম, ঠিকানা ছিল। কিন্তু দুর্ভোগ্যক্রমে সেই ব্যাগসহ সুজীত মারা যান। ফলে তাঁর বিস্তারিত পরিচয় আর মেলেনি। তবে সরকারি পর্যায়ে ভারতে খোঁজ নিলে তাঁর সঠিক পরিচয় হয়তো পাওয়া যেত। সুজীতের বয়স ২২/২৪ বছর হবে। ফর্শা, লম্বা, ছিপছিপে ধরণের শহীদ সুজীত অত্যন্ত সাহসী একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহের এই কৃতি সন্তানের কেউ স্বজন হয়ে থাকলে তাহলে আমাদের নিকট যোগাযোগ করুন।
 

এই বিভাগের আরও খবর

manusherkotha

manusherkotha

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ