আর্কাইভ
logo
ads

বিএনপি মারাত্মক ক্ষতি সহ্য করেছে, কিন্তু ভেঙে যায়নি : তারেক রহমান

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশকাল: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৩ এ.এম
বিএনপি মারাত্মক ক্ষতি সহ্য করেছে, কিন্তু ভেঙে যায়নি : তারেক রহমান

ফাইল ছবি

বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, মিথ্যা মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘১৬টা বছর ধরে বাংলাদেশ যেন একটা কালো মেঘের নিচে চাপা পড়ে ছিল। কেউ সেই অন্ধকার খুব তীব্রভাবে টের পেয়েছে, কেউ চুপচাপ বয়ে বেড়িয়েছে। কিন্তু যাদের রাজনৈতিক অবস্থান তখনকার পতিত সরকারের বিপরীতে ছিল, তাদের জন্য এই অন্ধকার ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা। রাতের বেলা দরজায় কড়া নাড়া, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন, ভয়কে সংস্কৃতি বানিয়ে ফেলা, আর অসংখ্য পরিবার অপেক্ষা করেছে সেই প্রিয়জনদের জন্য, যারা আর কোনো দিন ঘরে ফিরে আসেনি।

এই বোঝা বিএনপির চেয়ে বেশি আর কেউ বহন করেনি। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, হেফাজতে মৃত্যু, মিথ্যা মামলা— সব জায়গায় বিএনপির নেতাকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানেও সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে বিএনপির ঘরেই।’বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এসব কথা বলেন তারেক রহমান।তিনি আরো বলেন, ‘কিন্তু অত্যাচারের শিকার শুধু বিএনপি ছিল না; ছাত্র, সাংবাদিক, লেখক, পথচারী, সাধারণ মানুষ— সবাই সেই ভয়ংকর পরিবেশের ক্ষত বয়ে বেড়িয়েছে, ন্যূনতম মানবাধিকার হিসেবে বিবেচিত মর্যাদা, নিরাপত্তা, মত প্রকাশের অধিকারের মতো মৌলিক সব বিষয় ছিল হুমকির মুখে।’

পোস্টে তারেক রহমান লেখেন, ‘এই বছরগুলোতে আমাকেও কথা বলার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। ২০১৫ সাল থেকে আমার কথা বলার অধিকার সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নেওয়া হয়। দেশের কোনো পত্রিকা, টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়ায় যেন আমার কোনো বক্তব্য প্রকাশ না করা হয়, এমন নির্দেশনা জারি ছিল।তবুও এই চাপিয়ে দেওয়া নীরবতার মধ্যেও আমি অধিকার, গণতন্ত্র আর মানুষের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই চালিয়ে গিয়েছি, কারণ সত্যের স্পিরিটকে আদেশ দিয়ে থামানো যায় না।’

তিনি বলেন, ‘এই পুরো অন্ধকার সময়টায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের ধৈর্য ও প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় প্রতীক। মিথ্যা মামলা, কারাবাস, তাকে রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ করে দেওয়ার চেষ্টা— এ সবই পুরো দেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এক কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিফলন। তবুও তিনি তাঁর গণতান্ত্রিক আদর্শ থেকে কখনো সরে যাননি। তাঁর বিশ্বাস একটাই— অধিকার সবার; ভয় দেখিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়া যায় না।বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরো লেখেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবেও সেই দুঃসহ সময়ের সাক্ষী। আমার মা, যিনি দেশনেত্রী, নিজ হাতে সহ্য করেছেন তাঁর ছেলেকে জেলে নেওয়া, নির্যাতন করার মানসিক যন্ত্রণা। তাঁর আরেক ছেলেকে আমরা চিরতরে হারিয়েছি। বাংলাদেশের হাজারো পরিবারের মতো আমাদের পরিবারও ছিল লক্ষ্যবস্তু।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু ইতিহাসের একটা সত্য আছে— কষ্ট মানুষকে সব সময় তিক্ত করে না। কখনো কখনো কষ্ট মানুষকে আরো মহান করে তোলে। দেশনেত্রী, আমার মা এটাই প্রমাণ করেছেন। তিনি শিখিয়েছেন— যে অন্যায় আমরা সহ্য করেছি, তা যেন আর কারো জীবনে না আসে। দেশকে বদলাতে হলে, ঘৃণার পথ নয়, ন্যায়-নৈতিকতা আর ক্ষমাশীলতার পথই ভবিষ্যৎ গড়ে।’তারেক রহমান বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের প্রয়োজন রাজনীতির চেয়েও বড় কিছু— একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ, যেখানে সবার জন্য মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে, যেখানে কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, বিরোধী মত যেখানে হুমকি না হয়ে বরং গণতন্ত্রের অংশ হবে। যেখানে ভিন্নমতের কারণে কাউকে নিপীড়িত হতে হবে না বা গুম হয়ে যেতে হবে না ‘

বিএনপি সমাধানের পথে বিশ্বাসী মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপি আজ প্রতিশোধের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করছে, আমরা সমাধানের পথে বিশ্বাসী। আমরা এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে কোনো বাংলাদেশিকে রাষ্ট্রের ভয় নিয়ে বাঁচতে হবে না, তা সে সরকারের সমর্থক হোক বা বিরোধী।’তিনি বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়— মানবাধিকারই মানুষের দৈনন্দিন বেঁচে থাকার মৌলিক শর্ত। আমরা আবরার ফাহাদ, মুশতাক আহমেদ, ইলিয়াস আলী, সাজেদুল ইসলাম সুমন, সাগর-রুনি আর অসংখ্য শহীদের গল্প মনে রাখি, যেন ভবিষ্যতে এমন নিপীড়ন ও দায়মুক্তি আর কখনো ফিরে না আসে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি মারাত্মক ক্ষতি সহ্য করেছে, কিন্তু ভেঙে যায়নি। বরং সত্য, ন্যায়, জবাবদিহি, পুনর্মিলন, আর আইনের শাসনে বিশ্বাস রেখে আরো দৃঢ় হয়েছে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে প্রতিটি মানুষের কণ্ঠ, অধিকার ও জীবন মূল্যবান; যেখানে মানবাধিকার আমাদের ভবিষ্যতের ভিত্তি।’

এই বিভাগের আরও খবর

manusherkotha

manusherkotha

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ